বারোশো অ্যাকাউন্ট বন্ধ করতে টুইটারকে ভারতের চিঠি


বারোশো অ্যাকাউন্ট বন্ধ করতে টুইটারকে ভারতের চিঠি

বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তির সঙ্গে যোগসাজশ করে ভারত বিরোধী প্রচার চালাচ্ছে টুইটারের প্রায় বারোশো অ্যাকাউন্ট-এমন অভিযোগ এনে ভারত সরকার সেগুলো পুরোপুরি বন্ধ করার দাবি জানিয়েছে। 

গত ৪ ফেব্রুয়ারি এই দাবি জানিয়ে টুইটারকে চিঠিও পাঠিয়েছে তারা। তবে এই চিঠির জবাবে এখনও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি টুইটার। খবর বিবিসির।

এক সপ্তাহ আগে আড়াইশোরও বেশি টুইটার অ্যাকাউন্ট ব্লক করার দাবি জানিয়েছিল ভারত সরকার। সেগুলো সাময়িকভাবে বন্ধও রাখা হয়। পরে টুইটার সবগুলোই একাউন্টই উন্মুক্ত করে দেয়। 

কিছুদিন আগে কৃষক আন্দোলনকে কেন্দ্র করে টুইটারের সঙ্গে ভারত সরকারের সংঘাত শুরু হয়। পপ তারকা রিয়ানা, ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যাক্টিভিস্ট গ্রেটা থুনবার্গসহ আন্তর্জাতিক তারকারা এই আন্দোলনকে সমর্থন করে টুইট করার পর সেই সংঘাত চরমে পৌঁছে। 

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, "কয়েকজন আন্তর্জাতিক সেলিব্রিটি এমন বিষয় নিয়ে টুইট করেছিলেন যেগুলো নিয়ে স্পষ্টতই তারা বেশি কিছু জানেন না। ফলে আমাদের মন্ত্রণালয় যে তাতে কড়া প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে, তার পেছনে সঙ্গত কারণ ছিল। গ্রেটা থুনবার্গ যে 'টুলকিট' বা আন্দোলনের হাতিয়ার টুইট করে পরে তা মুছে দিয়েছেন- তা থেকেও অনেক কিছু বেরিয়ে এসেছে। তদন্ত হচ্ছে, দেখা যাক আর কী বেরোয়।"

এদিকে, সরকারের সঙ্গে টুইটারের এই সংঘাতকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর বিরাট আঘাত হিসেবেই দেখছেন ভারতের অ্যাক্টিভিস্টরা। অ্যাক্টিভিস্ট কবিতা কৃষ্ণান বলেন, "এটাকে আমি 'শ্যুটিং দ্য মেসেঞ্জার' বা দূতকে গুলি করার চেয়েও খারাপ জিনিস বলে মনে করছি। কারণ এটা হলো সরকারি ক্ষমতা দেখিয়ে সমালোচনা বন্ধ করে দেওয়া।"

সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করা নিউজ পোর্টাল-'মিডিয়ানামা'র সম্পাদক নিখিল পাহওয়াও সরকারের এই অবস্থানের তীব্র সমালোচনা করছেন। তিনি বলেন, "এই নির্দেশগুলো কিন্তু খুব গোপনে জারি করা হচ্ছে। এখানে সরকারের কোনও জবাবদিহিতা নেই, এমন কী বৈধ পথে আইন মেনে চিঠিগুলো দেওয়া হচ্ছে কি না সেটাও জানার উপায় নেই।"

ভারতে টুইটার কর্তৃপক্ষ অবশ্য আনুষ্ঠানিকভাবে এই চিঠির ব্যাপারে এখনও কোনও মন্তব্য করেনি বা প্রতিক্রিয়া জানায়নি। আমেরিকা ও জাপানের পর বিশ্বে ভারত তাদের তৃতীয় বৃহত্তম বাজার, এবং সেখানে এই প্রায় বারোশো অ্যাকাউন্টের একটিকেও তারা এখনও ব্লকও করেনি।